লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার একজন আলোকিত মানুষ আলহাজ্ব করিম উদ্দিন আহমদ। জন্মস্থান গ্রাম- কাশীরাম, ডাকঘর- করিমপুর, উপজেলা- কালীগঞ্জ, জেলা- লালমনিরহাট। জন্মসন- ১৯ মার্চ ১৯২৩ সাল। তাঁর পিতার নাম মৌলভী আছিম উদ্দিন আহমদ, মাতার নাম নেছাবি বেওয়া।
তাঁর জন্ম সাধারণ কৃষক পরিবারে হলেও কর্মের জোরেই অবস্থার দিন দিন পরিবর্তন ঘটে। ১৯৪৫ সালে প্রথম ব্যবসায় হয় তাঁর হাতেখড়ি। কিছুদিন মাড়োয়ারীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাকুরী ও পরে স্বল্প পুঁজির ব্যবসা তিনি শুরু করেন। নানা মহলের আস্থাভাজন ও বিশ্বস্থতার কারণে কোলকাতা, ভৈরব, নারায়নগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ঝালকাঠি ও সিলেটসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর পাট ও তামাক ব্যবসা সম্প্রসারিত হয়ে পড়ে। ফলে এলাকায় একজন বিত্তশালী ও সংবেদনশীল মানুষে পরিণত হন তিনি।
তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা মদনপুর বৈরাতির নিলাম্বর পন্ডিতের পাঠশালায়। পরে রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার অর্ন্তগত চিলাখাল পাইকান মাদ্রাসা থেকে তিনি ‘খারিজি’ পাশ করে পাকুরিয়া শরীফ মাদ্রাসায় তিনি ভর্তি হন। অবশেষে তুষভান্ডার উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেনী র্পযন্ত তিনি পড়াশুনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় করিম উদ্দিন আহমদ কালীগঞ্জ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সাবেক ১৯৫৪ সালে ইউনিয় বোর্ডে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে জনসেবায় তিনি আত্মনিয়োগ করেন। একনাগাড়ে ষোল বছর তিনি ইউনিয়ন বোর্ডে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। সাবেক পূর্ব পাকিস্তান আমলে কালীগঞ্জে একটি উন্নয়ন পরিষদ গঠন করা হয়। তিনি এই পরিষদের সেক্রেটারী মনোনীত হন এবং উন্নয়ন কর্মকান্ডে অবদানের জন্য ‘গভর্ণর’ পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৭০ সালে তিনি সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। করিম উদ্দিন আহমদ তরুণ বয়সেই ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনে মুকুন্দ দাশের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। তিনি এ আন্দোলনের ভলান্টিয়ার হিসেবে তুষভান্ডার বাজারে খাজনা বন্ধ করতে গেলে গ্রেফতার হন। মূলত গরীব দুঃখী মানুষের পাশে থেকে তাদের স্বার্থই তিনি উপলব্ধি করেছেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তাঁরই প্রেরণায় প্রথম শহীদ মিনার ‘চিরঞ্জবী কালীগঞ্জ’ নির্মিত হয়। তিনি ১৯৫৯ সালে কালীগঞ্জ করিম উদ্দিন পাবলিক পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করেন। বর্তমানে এটি কালীগঞ্জ উপজেলার শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালে করিম উদ্দিন পাবলিক ডিগ্রী কলেজ ও ১৯৭৩ সালে করিম উদ্দিন প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য বিষয়কে পরিস্কার করে গেছেন। ১৯৭৩ সালে করিমপুর নেছাবিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও এতিম খানা প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও থানার অসংখ্য স্কুল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও দাতা হিসেবে এলাকায় স্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় করিম উদ্দিন আহমদ কালীগঞ্জ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সাবকে ইপিআর, আনসার ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তিনি মুক্তিবাহিনী গঠন করেন। তাঁর নিজস্ব বাসভবনে এর প্রধান কার্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৪ মাস এলাকাটি ‘মুক্ত’ এলাকা হিসেবে থাকায় স্থানীয় যুবকদের এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এসময় তিনি কালীগঞ্জ মাঠে এক বিশাল জনসভায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। পরে পাক বাহিনীর দখলের কারণে তিনি কুচবিহার জেলার সিতাই থানায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। সেখানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সম্মতিক্রমে তিনি দুটি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং বাংলাদেশী যুবকদের সংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণদানের ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে কিনি মুক্তিযুদ্ধের সহায়তা করেন। এই সময় তিনি উত্তরাঞ্চলীয় মুক্তিবাহিনীর সংগঠক হিসেবে বাংলাদেশ ও ভারতে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষ কয়েক মাস তাঁর বাড়ীটি পাকবাহিনীর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। স্বাধীনতা উত্তরকালে বিধ্বস্ত এলাকাটিতে পূর্নগঠনে তিনি আত্মনিয়োগ করেন। সীমান্তবর্তী ভারতীয় জেলা কুচবিহারের সরকারী কর্তৃপক্ষের সম্মতি নিয়ে তিনি এলাকায় সর্বস্বহারা কৃষকদের মধ্যে হালের গরু বিতরণসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির সরবরাহের ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। তাঁর একনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় ‘রংপুর- দিনাজপুর পল্লী সংস্থা’ (আরডিআরএস) প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থার প্রধান মিঃ হুডনিকে এলাকায় নিয়ে এসে এর প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়। এটি এখনও বিভিন্ন কার্যক্রম চালু রেখেছে।
১৯৭৩ সালে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। ১৯৮৫ সালে জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে তিনি প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ১৯৯০ সালের ১৭ই মার্চ তার জ্যেষ্ঠ পুত্র নুরুজ্জামান আহমেদ জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে উপজেলা
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে তার হাতে রাজনীতির হাল ছেড়ে দিয়ে রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। উল্লখ্যে য,ে তার জ্যষ্ঠে পুত্র নুরুজ্জামান আহমদে র্বতমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদশে সরকাররে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়রে মাননীয় প্রতমিন্ত্রী। তার চর্তুথ পুত্র মাহবুবুজ্জামান আহমদে র্বতমানে কালীগঞ্জ উপজলোর একজন নর্বিাচতি চয়োরম্যান । করিম উদ্দিন আহমদ শুধু রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিত্ব নন তিনি সাহিত্য ও সংস্কৃতি অনুরাগী ছিলেন। লোকসাহিত্য ও আঞ্চলিক ভাষার গবেষক ধর্মনারায়ণ সরকার ভক্তিশাস্ত্রীকে তাঁর রচিত গবেষণা গ্রন্থ ‘উত্তর বাংলার লোকসাহিত্য ও ভাষা’ গ্রন্থ প্রকাশে মুদ্রণ ব্যয় বহন করে তিনি উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করেছেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় উপজেলার অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘অন্বেষা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী’ প্রতিষ্ঠা পায়।
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে তার হাতে রাজনীতির হাল ছেড়ে দিয়ে রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। উল্লখ্যে য,ে তার জ্যষ্ঠে পুত্র নুরুজ্জামান আহমদে র্বতমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদশে সরকাররে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়রে মাননীয় প্রতমিন্ত্রী। তার চর্তুথ পুত্র মাহবুবুজ্জামান আহমদে র্বতমানে কালীগঞ্জ উপজলোর একজন নর্বিাচতি চয়োরম্যান । করিম উদ্দিন আহমদ শুধু রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিত্ব নন তিনি সাহিত্য ও সংস্কৃতি অনুরাগী ছিলেন। লোকসাহিত্য ও আঞ্চলিক ভাষার গবেষক ধর্মনারায়ণ সরকার ভক্তিশাস্ত্রীকে তাঁর রচিত গবেষণা গ্রন্থ ‘উত্তর বাংলার লোকসাহিত্য ও ভাষা’ গ্রন্থ প্রকাশে মুদ্রণ ব্যয় বহন করে তিনি উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করেছেন। তাঁর অনুপ্রেরণায় উপজেলার অন্যতম সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘অন্বেষা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী’ প্রতিষ্ঠা পায়।
তার পরবিারে দুই জন স্ত্রী নূরজাহান করমি ও সামসুন্নাহার করমি এর মোট ১৩জন সন্তান , স্ত্রী নূরজাহান করমি ১১ জানুয়ারী ২০১০ সালে মৃত্যুবরণ করনে, জ্যষ্ঠে কন্যা শামসুন্নাহার আতকি আমরেকিার ফ্লোরডিায় বসবাস করনে, জ্যষ্ঠে পুত্র নুরুজ্জামান আহমদে র্বতমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদশে সরকাররে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়রে মাননীয় প্রতমিন্ত্রী, ২য় পুত্র রশীদুজ্জামান আহমদে একজন বীর মুক্তযিোদ্ধা, কালীগঞ্জ উপজলোর মুক্তযিোদ্ধা কমান্ডার এবং করমি উদ্দনি পাবলকি কলজেরে অধ্যক্ষ , ২য় কন্যা নূরন নাহার আনোয়ার ঢাকা বশ্বিবদ্যিালয়রে আই বি এ এর সাবকে চয়োরম্যান ও সাঊথ ইস্ট ইউনভর্িাসটিরি ভাইস চ্যান্সলের ড আনোয়ার হোসনে এর স্ত্রী, ৩য় কন্যা জাহানারা ইকবাল অবসরপ্রাপ্ত উপসচবি জনাব ইকবাল হোসনে এর স্ত্রী, র্৪থ কন্য রওশন আরা আহমদে ( চায়না ) রংপুররে বশিষ্টি ব্যবসায়ী ও রোটারয়িান জনাব আলতাফ হোসনে চৌধুরী এর স্ত্রী, রংপুর কালক্টেরটে স্কুল এন্ড কলজেরে শক্ষিকতা ছাড়াও রংপুর মহানগরীয় আওয়ামলিীগরে একজন সক্রয়ি সদস্য, রংপুর জলো মহলিা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদকিা । ৫ম কন্যা জন্নিাত আরা ডাঃ হাফজিুর রহমানরে স্ত্রী । ৩য় পুত্র সামসুজ্জামান আহমদে একজন বশিষ্টি ব্যবসায়ী, র্৪থ পুত্র মাহবুবুজ্জামান আহমদে র্দীঘ ২০ বছর তুষভান্ডার ইউনয়িন পরষিদরে চয়োরম্যান ছলিনে র্বতমানে তনিি কালীগঞ্জ উপজলো পরষিদরে চয়োরম্যান। ৫ম পুত্র খুরশীদুজ্জামান আহমদে কালীগঞ্জ করমি উদ্দনি পাবলকি পাইলট উচ্চ বদ্যিালয়রে প্রধান শক্ষিক, ৬ষ্ঠ কন্যা আঞ্জুমান আরা জাহদি “ডল্টো লাইফ ইন্সুরন্সে” এর কন্দ্রেীয় র্পযায়রে র্কমর্কতা মরহুম জাহদি হাসানরে স্ত্রী, ৭ম কন্যা ইশমত আরা জুই ঢাকা বশ্বিবদ্যিালয়রে র্মাকটেংি বভিাগরে চয়োরম্যান ডঃ আনসিুর রহমান এর স্ত্রী, জীবন বীমা র্কপোরশেন প্রধান র্কাযালয়রে এর ডপেুটি ম্যানজোর । ৬ষ্ঠ পুত্র ওয়াহদিুজ্জামান আহমদে বাংলাদশে উন্মুক্ত বশ্বিবদ্যিালয়রে রজিউিনাল রসর্িোস সন্টোর এর একজন ডপেুটি ডরিক্টের।
লালমনিরহাট কালীগঞ্জের কীর্তিমান পুরুষ করিম উদ্দিন আহমদ ১৯৯১ সালের ২৮শে আগষ্ট তারিখে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।






































সার্থক পিতার গর্বিত সন্তানেরা মানুষ তো হবেনই
ReplyDelete